নির্যাতিত বেলাল রাঃ এর কঠিন প্রতিশোধ | হযরত বেলাল | বেলালের প্রতিশোধ | Islamic Video Bangla

Islamic Video Bangla
Islamic Video Bangla
337.4 هزار بار بازدید - 11 ماه پیش - হযরত বেলাল (রা.) ছিলেন একজন
হযরত বেলাল (রা.) ছিলেন একজন হাবশী ক্রীতদাস। বংশানুক্রমে এই দাসত্বের অভিশাপ নিয়ে তার জন্ম। আরবের সেই সমাজে একজন ক্রীতদাসের সাথে মনিবের আচরণ ছিল পশুর চেয়ে নিকৃষ্ট। কোনো কারণে মনিব যদি অসন্তুষ্ট হতো, তাহলে দাস-দাসীদের উপর নেমে আসতো ভয়ানক নির্যাতন।
এটা ইসলাম প্রচারের একেবারে প্রথম দিককার কথা। ততদিনে হাতে গোনা কয়েকজন মানুষ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। সংখ্যায় অল্প হওয়ায় তাদেরকে নানাভাবে অত্যাচার করছে কোরায়েশরা। এমনকি ওই সময় আরবের উচ্চ বংশের কোনো ব্যক্তিও যদি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতো, তাকেও নির্যাতনের মুখে পরতে হতো। এমনই নাজুক পরিস্থিতিতে হযরত বেলালের কাছে ইসলামের দাওয়াত আসে। আজন্ম ক্রীতদাস বেলাল উপলব্ধি করেন, ইসলামের আদর্শই কেবল পারে প্রতিটি মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে। এই মহাসত্যই পারে মানবজাতিকে সকল অন্যায় থেকে মুক্তি দিতে। তিনি গোপনে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। কিন্তু সেটা সর্বসাধারণের সামনে প্রকাশ করার মতো সাহস তিনি পান না। ওই সময় বেলাল রাঃ এক নন, আরো অনেকেই আল্লাহর নবীর উপর ঈমান আনা সত্ত্বেও তা প্রকাশ করতো না নির্যাতনের ভয়ে। তাদের মধ্যে বেলালের অবস্থাই ছিল সবচেয়ে খারাপ, কেননা তিনি ছিলেন জন্মগতভাবেই ক্রীতদাস। তদুপরী হযরত বেলাল রাঃ এর মনিব উমাইয়া ইবনে খালফ ছিল আল্লাহর নবী হযরত মুহাম্মদ সঃ এর সবচেয়ে বড় দুশমনদের একজন। আবু জাহেল, আবু সুফিয়ান সহ অন্য নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের সাথে মিলে সে চেষ্টা করছিল কিভাবে ইসলামের আলোকে চিরতরে নিভিয়ে দেয়া যায়। সেখানে তারই গোলাম হয়ে বেলাল ইসলাম ধর্মের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছে, এটা জানতে পারলে সে হয়তো বেলাল (রা.) কে হত্যাই করে ফেলবে। তাই গভীর রাতে যখন সবাই ঘুমিয়ে পরতো, বেলাল রাঃ একাকি রাত জেগে প্রার্থনা করতেন। তিনি আল্লাহর দরবারে দু’হাত তুলে কান্নায় ভেঙে পরতেন আর দোয়া করতেন, যেন আল্লাহ তাআলা তার ঈমানকে আরো দৃঢ় করে দেন।
বেলাল (রা.) বিষয়টি গোপন রাখার চেষ্টা করলেও তা বেশিদিন গোপন থাকে নি। একদিন হঠাৎ কিছু বেলালের ঘর থেকে মোনাজাতের আওয়াজ শুনতে পায় এবং তাদের সন্দেহ হয়। তারা অনুমতি তৎক্ষণাৎ বেলালের ঘরে প্রবেশ করে এবং তাকে আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ করে প্রার্থনা করতে দেখে। তাদের বুঝতে বাকি থাকে না, বেলাল মুহাম্মদ সাঃ এর প্রচারিত ধর্মের প্রতি ঈমান এনেছে। বেলালের মনিব উমাইয়া ইবনে খালফকে বিষয়টি জানাতে তারা এক মুহূর্তও দেরি করে না। বিষয়টি জানার পর উমাইয়া খুবই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং তৎক্ষণাৎ বেলাল (রা.) কে ডেকে পাঠায়। সে কঠোর ভাষায় বলে, বেলাল এই মুহূ্র্তে মুহাম্মদের ধর্ম ত্যাগ করো।
বেলাল রাঃ বলেন, জীবন গেলেও আমি আমার ধর্ম ত্যাগ করবো না।
উমাইয়া বলে, তাহলে আমি তোমাকে এমন শাস্তি দেব, যা আরবরা আগে কখনো দেখে নি।
বেলাল (রা.) বলেন, তাহলে আমিও এমন ধৈর্যের পরিচয় দেব, যা আরবরা আগে কখনো দেখে নি।
অতঃপর শুরু হয় হযরত বেলাল (রা.) এর ধৈযের পরীক্ষা। উমাইয়ার নির্দেশে তার অনুগত লোকেরা বেলাল রাঃ কে দড়ি দিয়ে বেধে মরুভূমিতে নিয়ে যায়। সেখানে একটি খুটির সাথে তাঁকে বেধে ফেলা হয়। বেলালের পিঠে একের পর এক চাবুক মারতে থাকে উমাইয়া। সে চিৎকার করে বলে, বেলাল, বলো কে তোমার রব?  
বেলাল বলেন, আমার রব কেবল আল্লাহ।
উমাইয়া বলে, তুমি যদি আল্লাহর পাশাপাশি লাত আর উজ্জাকে তোমার রব হিসেবে মেনে নাও, তাহলে আমি তোকে ছেড়ে দেব।
বেলাল (রা.) বলেন, আল্লাহ এক, তার কোনো কোনো শরিক নেই।
উমাইয়া আবার চাবুক মারতে শুরু করে। অতপর সে যখন ক্লান্ত হয়ে পরে, তখন আবারো জিজ্ঞেস করে, বেলাল, বলো কে তোমার প্রভু?
বেলাল (রা.) বলেন, আমার প্রভু কেবলই আল্লাহ।
উমাইয়া আবারো চাবুক মারতে শুরু করে। এভাবে সে ততক্ষণ নির্যাতন চালাতে থাকে, যতক্ষণ না নিজের শরীরে চাবুক মারার মতো শক্তি ফুরিয়ে যায়। সে যখন ক্লান্ত হয়ে পরে তখন সে বেলালকে ঘরে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়। তবে সেদিনই বেলালের ঈমানের পরীক্ষার শেষ ছিল না। বরং পরদিন তিনি মুখোমুখি হন এরচেয়েও গুরুতর পরীক্ষার।
উমাইয়া ইবনে খালফের নির্দেশে তার লোকেরা হযরত বেলালকে মরুভূমির উত্তপ্ত বালুর উপর শুইয়ে দেয়। বেলালের সারা শরীরে ছিল আঘাতের দগদগে ক্ষত। এই অবস্থায় তাকে যখন প্রখর সূর্যের তাপে উত্তপ্ত মরুভূমির গনগনে বালুর উপর শোয়ানো হয়, তিনি ব্যথায় যন্ত্রণায় চিৎকার করতে শুরু করেন। কিন্তু তাতে উমাইয়ার হৃদয় বিগলিত হয় না। বরং সে বেলালের বুকের উপর চাপিয়ে দেয় প্রকান্ড এক পাথর। এমনকি ক্ষুধা তৃষ্ণায় কাতর বেলাল (রা.) কে এক ফোটা পানিও পান করতে দেয় না পাষণ্ড ইমাউয়া। তথাপি ঈমানের সাক্ষ্য থেকে এক চুল পরিমাণও সরে আসেন না হযরত বেলাল রাঃ।
উমাইয়ার নির্যাতনে হযরত বেলালের প্রাণবায়ু যখন উড়ে যাওয়ার উপক্রম, তখনই হঠাৎ ছুটে আসেন নবীজির প্রিয় সাহাবী, হযরত আবু বকর (রা.)। তিনি দুইশ’ দেরহামের বিনিময়ে উমাইয়ার কাছ থেকে হযরত বেলাল (রা.) কে আযাদ করে নেন। অতঃপর নিজের বাড়িতে নিয়ে দিনরাত সেবা করে তিনি তাকে সুস্থ করে তোলেন। আর এভাবেই শেষ হয় হযরত বেলাল (রা.) এর উপর নির্যাতনের অধ্যায়।
এই ঘটনার প্রায় এক দশক পরের কথা। কোরায়েশদের অত্যাচারে অতীষ্ট হয়ে মদীনায় হেজরত করেছেন আল্লাহর নবী হযরত মুহাম্মদ সঃ ও তার সাহাবীরা। মদীনার অধিকাংশ মানুষই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে নেয়। তবে মক্কা ছেড়ে চলে আসলেও সেখানকার কোরায়েশদের সাথে মদীনার মুসলমানদের বিরোধ থেকে যায়। মক্কাবাসী চায়, মদীনায় হামলা করে ইসলামকে পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে। রসুল (স.) মক্কা বিজয় করার আগ পর্যন্ত মক্কা ও মদীনার মধ্যে বেশ কয়েকটি যুদ্ধ সংঘটিত হয়। সর্বপ্রথম বড় পরিসরে যে যুদ্ধটি হয়েছিল, তা বদরের যুদ্ধ নামে পরিচিত। হিজরী দ্বিতীয় সনের ১৭ রমজান অনুসারে, ১৭ মার্চ ৬২৪ খ্রিস্টাব্দে মদীনা থেকে প্রায় ৮০ মাইল দক্ষিণ পশ্চিমে বদর উপত্যকায় সংঘটিত হয় এই যুদ্ধ। আর সেখানেই হযরত বেলাল (রা.) পেয়ে যান তার সাবেক মনিব উমাইয়ার উপর প্রতিশোধ গ্রহণের সুবর্ণ সুযোগ। বিস্তারিত দেখুন আমাদের ভিডিওতে।
Islamic Video Bangla
নির্যাতিত বেলাল রাঃ এর কঠিন প্রতিশোধ
বেলালের প্রতিশোধ
11 ماه پیش در تاریخ 1402/05/12 منتشر شده است.
337,436 بـار بازدید شده
... بیشتر