সালমান শাহের জন্ম, বেড়ে ওঠা ও রেখে যাওয়া স্মৃতি। Salman Shah Life History। Mizan The History Teller।

Mizan The History Teller
Mizan The History Teller
313.9 هزار بار بازدید - 2 سال پیش - বাংলা চলচ্চিত্রের অকালে ঝরে যাওয়া
বাংলা চলচ্চিত্রের অকালে ঝরে যাওয়া নক্ষত্র আমাদের স্বপ্নের নায়ক, মহানায়ক সালমান শাহ। ধূমকেতুর মতো বাংলা চলচ্চিত্রজগতে এসে মন জয় করে নিয়েছিলেন সকলের। চলেও গিয়েছিলেন ধূমকেতুর মতোই। আমাদের চলচ্চিত্রের এই কিংবদন্তীর জন্ম ১৯৭১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সিলেট জেলায়।

১৯৯৬ সালের ৬ই সেপ্টেম্বর অসংখ্য ভক্তকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে যান এ নায়ক। তাঁর পিতার নাম কমর উদ্দিন চৌধুরী ও মাতা নীলা চৌধুরী। সালমানের দাদার বাড়ি সিলেট শহরের শেখঘাটে আর নানার বাড়ি দারিয়া পাড়ায়। যে বাড়ির নাম এখন ‘সালমান শাহ হাউস’। তাঁর নানার মূলবাড়ি ছিল মৌলভিবাজারে। তাদের পরিবারটি ছিল সংস্কৃতিমনা।  তাঁর নানা পূর্ব পাকিস্তানের প্রথম চলচ্চিত্র ‘মুখ ও মুখোশ’-এ অভিনয় করেছিলেন। তাই অভিনয় জগতে আসার জন্য ছোটবেলা থেকেই পরিবারের সবার উৎসাহ, সহায়তা তিনি পেয়েছিলেন। পরিবারের বড় ছেলে হওয়ায় সবার আদরেরও ছিলেন তিনি।

সালমান পড়াশোনা করেন খুলনার বয়রা মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে। একই স্কুলে তার প্রথম ছবির নায়িকা মৌসুমীও তার সহপাঠী ছিলেন। ১৯৮৭ সালে তিনি ঢাকার ধানমণ্ডি আরব মিশন স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন। পরে আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে এইচএসসি ও ধানমণ্ডির ড. মালেকা সায়েন্স কলেজ থেকে বি.কম পাস করেন। সেই সময়েই বন্ধুদের বলতেন তাঁর স্বপ্নের কথা। বলতেন একদিন অনেক বড় অভিনেতা হবেন তিনি।

চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশের আগেই ১৯৯২ সালের ১২ আগস্ট বিয়ে করেন তিনি। স্ত্রী ছিলেন তাঁর খালার বান্ধবীর মেয়ে সামিরা হক।

সালমান শাহর অভিনয় জীবন শুরু হয় বিটিভিতে, ১৯৮৫ সালে। হানিফ সংকেতের গ্রন্থনায় 'কথার কথা' নামক একটি ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান হতো তখন। সে অনুষ্ঠানের একটি গানে মাদকাসক্ত এক তরুণের ভূমিকায় অভিনয় করেন তিনি। যে গানটি গেয়েছিলেন স্বয়ং হানিফ সংকেত। ১৯৮৫ সালে বিটিভির আকাশ ছোঁয়া নাটকের মাধ্যমে তার অভিষেক হয় টিভি নাটকে। এরপর পরে দেয়াল (১৯৮৫), সব পাখি ঘরে ফিরে (১৯৮৫), সৈকতে সারস (১৯৮৮), নয়ন (১৯৯৫), স্বপ্নের পৃথিবী (১৯৯৬) নাটকেও অভিনয় করেন। 'নয়ন' নাটকটি সে বছর শ্রেষ্ঠ একক নাটক হিসেবে বাচসাস পুরস্কার লাভ করে। এছাড়া তিনি ১৯৯০ সালে মঈনুল আহসান সাবের রচিত উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত 'পাথর সময়' ও ১৯৯৪ সালে 'ইতিকথা' ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করেন। প্রেমযুদ্ধ ও ঋণশোধ চলচ্চিত্রে প্লেব্যাকও করেন তিনি। মিল্ক ভিটা, জাগুয়ার কেডস, ইস্পাহানি গোল্ড, স্টার টি, কোকাকোলা, ফানটাসহসহ কয়েকটি পণ্যের বিজ্ঞাপনচিত্রে অভিনয়ও করেছেন।

সালমানের হারিয়ে যাবার সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল দেশ ও বিদেশের নানা পত্রিকায়। বিবিসি, এমনকি বিখ্যাত টাইম ম্যাগাজিনেও প্রকাশিত হয়েছিলো তার অকালে চলে যাওয়ার সংবাদ। ২৩শে সেপ্টেম্বর ১৯৯৬ সালে প্রকাশিত টাইম ম্যাগাজিনের প্রতিবেদনে বলা হয় সালমান শাহ ছিলেন বাংলা চলচ্চিত্রের সেরা তারকা। ২৫ বছর বয়সী এই অভিনেতার চিরো দিনের জন্য চলে যাওয়ায় সারা দেশ কীভাবে শোকের ছায়ায় আচ্ছন্ন ও কয়েকজন তরুণীর সুইসাইডের কথাও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনটিতে। টাইম ম্যাগাজিন একটা ব্যাপার অবশ্য উল্লেখ করেনি যে, এই উপমহাদেশে অনেক তারকাই অকালে ঝরে গেছেন। কিন্তু আর কারও জন্যই এভাবে ভক্তরা নিজেদের আত্মাহুতি দিয়েছেন এটা বিরল ঘটনা।

ধুমকেতুর মতো আবির্ভাব ঘটেছিল তার। মাত্র চারটি বছর ছিল তার অভিনয়জীবনের ব্যাপ্তি। কিন্তু এই চারটি বছরে যা করে গেছেন, রেখে গেছেন, মৃত্যুর এতো বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরও আজ তার শূন্যস্থানটা কেউ পূরণ করতে পারেনি। তার মানের না হোক, কাছাকাছি কেউও আজও বাংলা চলচ্চিত্রে আসেনি- এটাই আফসোসের। আজকের বাংলা চলচ্চিত্র শিল্পে তার মতো কাউকেই প্রয়োজন, যে আবারও চলচ্চিত্রে একটা বিপ্লব ঘটাতে পারবে, আধুনিকতার ছোঁয়ায় বদলে দেবে পুরো চলচ্চিত্রাঙ্গন।

নক্ষত্রেরও পতন হয়, সবার প্রিয় নায়ক সালমান শাহর পতনটা হয়তো এভাবে না হলেই ভালো হতো। কিন্তু মানুষের সব আশা তো পূরণ হয় না। ঢালিউডের ইতিহাসে অনেক নায়কই অতীতে অকালে মারা গেছেন। কিন্তু মৃত্যুর এতো বছর পরও এত জনপ্রিয়তা আর কোনো নায়কের আছে কী না তাতে সন্দেহ আছে যথেষ্ট। বাংলা সিনেমা যতদিন বেঁচে থাকবে, বেঁচে থাকবে সিনেমাপ্রেমীরা; ততদিন বেঁচে থাকবেন সালমান শাহও। ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ পর্যন্ত আমাদের মতো সিনেমাপ্রেমীরা সালমান শাহকে ভালবেসে যাবে তা অকপটেই বলা যায়।

তাঁর মৃত্যুতে এদেশের চলচ্চিত্রশিল্পের যে ক্ষতি হয়েছে তা আজও পূরণ হয় নি। মাঝে মাঝেই ইউটিউবে গান শুনতে শুনতে সালমান শাহের কোনো একটা গান চলে আসে। পুরোনো দিনগুলোর কথা মনে পড়ে যায়। নিচের কমেন্ট সেকশনে দেখি এখনো তাঁর ভক্তদের কান্না। তাদের একটাই আফসোস, “ইস! সালমান শাহ যদি আজ বেঁচে থাকতো?”

সালমান শাহ এখনও বেঁচে আছেন, তাঁর ভক্তদের হৃদয়ে স্বপ্নের নায়ক হয়ে, ভালোবাসার রাজপুত্র হয়ে। এত বছর পেরিয়ে গেছে, কিন্তু এদেশের মানুষ সালমানকে ভুলতে পারেনি। মৃত্যুর এত বছর পরও তাঁর জনপ্রিয়তা এতটুকু কমেনি।

এই মহানায়কের প্রতি রইলো অগাধ শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা। Salman Shah। Mizan The History Teller.

If need plz contact with us though email : mizansumoninfo@gmail.

Music Credit: 1) Artist: Sayeed.
Album: ASC-The Diary.

2) Artist: Billodal Baruri.

3) Artist: Rumana Morshed Kanak Chapa.

#mizanthehistoryteller #mizan #salman #salmanshah
2 سال پیش در تاریخ 1401/06/27 منتشر شده است.
313,998 بـار بازدید شده
... بیشتر