নাকের এলার্জি দূর করার উপায় - Allergic rhinitis treatment bangla

MediTalk Digital
MediTalk Digital
260.6 هزار بار بازدید - 2 سال پیش - নাক ডাকার সমস্যা নিয়ে বলেছেনডা.
নাক ডাকার সমস্যা নিয়ে বলেছেন

ডা. সাবরিনা হোসেন
নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ ও হেড-নেক সার্জন
কনসালটেন্ট, বিআরবি হসপিটালস লিঃ
পান্থপথ, ঢাকা

মিডিয়া পার্টনার - MediTalk

হাঁচি হল, নাক দিয়ে পানি পড়ল, এটা কোনো রোগ হল?

প্রথম প্রথম কেউ এ লক্ষণগুলো রোগ বলে মনে করেন না। ভাবেন এমনিতে সেরে যাবে। তবে যখন বারবার হতে শুরু করে, বিশেষ করে পুরানো জিনিসপত্র পরিষ্কার করতে গেলে বা ফুলের গন্ধ নিলে বা ফুলের বাগানে হাঁটলে অনবরত হাঁচি বা নাক বন্ধ হয়ে যায় তখন এ লক্ষণগুলোকে রোগ হিসেবে ভাবতে শুরু করেন এবং নিজে নিজেই অথবা ওষুধের দোকানদারের সঙ্গে আলাপ করে দুএকটি অ্যান্টিহিস্টামিন খেয়ে নেন। এতে রোগের লক্ষণ কিছুটা উপসম হয়।

যখন বারবার হয় তখন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা অ্যান্টিহিস্টামিনের পাশাপাশি স্প্রে আকারে স্টেরয়েড নাসারন্ধ্রে ব্যবহার করতে পরামর্শ দেন। এতে অবশ্য রোগী আগের তুলনায় অনেক বেশি ভালো অনুভব করেন।

তবে বাস্তবতা হল যতদিন স্টেরয়েড স্প্রে ব্যবহার করা হয় ততদিনই ভালো থাকা যায়। বন্ধ করলেই সঙ্গে সঙ্গে না হলেও কিছুদিন পরই শুরু হয়ে যায় আগের অবস্থা।

এরকম হলে ধরে নিতে হবে আপনি এলার্জিজনিত রোগে বিশেষত এলার্জিক রাইনাইটিস রোগে ভুগছেন।

তাহলে এই এলার্জিক রাইনাইটিস রোগটি কী, কেনো হয় এবং কীভাবে এড়ানো যায়? তা নিয়ে কিছু আলোচনা করা যাক।

এলার্জিক রাইনাইটিস রোগটি হল এলার্জিজনিত নাকের প্রদাহ। উপসর্গগুলো হচ্ছে অনবরত হাঁচি, নাক চুলকানো, নাক দিয়ে পানি পড়া, এবং নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, কারও কারও চোখ দিয়ে পানি পড়া এবং চোখ লাল হয়ে যায়।

প্রকারভেদ

এলার্জিক রাইনাইটিস থাকলে সারা বছর ধরেই এই রোগের লক্ষণ দেখা দেয়। বিশেষ করে পুরানো ধুলাবালি (যাতে মাইট থাকে), ছত্রাক বা পোষা প্রাণীর লোম সংস্পর্শ এলেই এর লক্ষণ শুরু হয়।

ঋতুনির্ভর এলার্জিক রাইনাইটস অনেক ঋতুতে ফুলের রেণু আধিক্য থাকে এবং ওই রেণুর সংস্পর্শে এলেই রোগের লক্ষণগুলো দেখা দেয়। সাধারণত গ্রীষ্মের শেষে এবং বর্ষা ও শরতে এ রোগের প্রকোপ বেশি দেখা যায়।

যদিও বাংলাদেশে কতজন এই রোগে ভুগে থাকেন তার সঠিক তথ্য নেই তবে মোট জনগণের শতকরা ১০ থেকে ১৫ ভাগ মানুষ এই রোগে ভোগেন ৈবলে অনেকের ধারণা। বিশ্বের কোনও কোনও দেশ বিশেষত অস্ট্রেলিয়াতে শতকরা ৩০ শতাংশ জনগণ এ রোগে ভোগেন।

এ রোগের লক্ষণ যে কোনো বয়সেই দেখা দিতে পারে। তবে শিশুদেরই এ রোগ আক্রান্ত হতে দেখা যায় বেশি। এ রোগ বংশানুক্রমিক ভাবেও আসতে পারে।

তাছাড়া নতুন পোষা প্রাণী অথবা বাসস্থান পরিবর্তনে নতুন পরিবেশে এলার্জিক রাইনাইটিস রোগের লক্ষণ প্রকোট আকারে হতে পারে।

যেভাবে হয়: যে সব রোগীর বংশানুক্রমিকভাবে এলার্জি হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে তাদের ক্ষেত্রে দেখা যায় কিছু কিছু এলারজেনের সংস্পর্শে এলে রক্তের আইজিইয়ের মাত্রা অনেক বেড়ে যায় এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গাতে বিশেষত নাকে অবস্থিত মাস্ট সেল নামক এক ধরনের কোষের সঙ্গে লেগে থাকে। কোনো ভাবে শরীরে আবার এই এলারজেনের সংস্পর্শে এলে মাস্ট সেলগুলো ভেঙে যায় এবং এর থেকে ভাসো একটিভএমাইন নির্গত হয়। এই রাসায়নিক পদার্থগুলো প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে এবং উপসর্গগুলো ঘটায়।

সম্ভাব্য কারণ: মাইট (যা পুরানো ধুলাবালিতে থাকে) ঘরের ধুলা, ময়লা, ফুলের রেণু, প্রাণীর পশম বা চুল, প্রসাধনী সামগ্রী।

প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা

রক্ত পরীক্ষা বিশেষত ইয়োসিনোফিলের মাত্রা বেশি আছে কিনা তা দেখা।

সিরাম আইজিইয়ের মাত্রা: সাধারণত এলার্জি রোগীদের ক্ষেত্রে আইজিইয়ের মাত্রা বেশি থাকে। স্কিন প্রিক টেস্ট: এই পরীক্ষায় রোগীর চামড়ার ওপর বিভিন্ন এলারজেন দিয়ে পরীক্ষা করা হয়। এবং এই পরীক্ষাতে কোন কোন জিনিসে রোগীর এলার্জি আছে তা ধরা পড়ে।

এছাড়াও রয়েছে সাইনাসের এক্স-রে।

সমন্বিতভাবে এ রোগের চিকিৎসা হল

এলারজেন পরিহার: ওষুধ প্রয়োগ করে সাময়িকভাবে এলার্জির উপসম অনেকটা পাওয়া যায়। এ রোগের প্রধান ওষুধ হল এন্টিহিস্টামিন ও নেসাল স্টেরয়েড। এন্টিহিস্টামিন, নেসাল স্টেরয়েড ব্যবহারে রোগের লক্ষণ তাৎক্ষণিক উপসম হয়। যেহেতু স্টেরয়েডের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বেশি তাই এ ওষুধ এক নাগারে বেশিদিন ব্যবহার করা যায় না। যতদিন ব্যবহার করা যায় ততদিনই ভালো থাকে এবং ওষুধ বন্ধ করলেই আবার রোগের লক্ষণগুলো দেখা দেয়।

এলার্জি ভ্যাকসিন বা ইমুনোথেরাপি: এলার্জি জিনিস থেকে এড়িয়ে চলা ও ওষুধের পাশাপাশি ভ্যাকসিন বা ইমুনোথেরাপি এলার্জিক রাইনাইটিস রোগীদের সুস্থ থাকার অন্যতম চিকিৎসা পদ্ধতি।

এলার্জি ভ্যাকসিন বা ইমুথেরাপির মূল উদ্দেশ্য হল যে ‘মাইট’ থেকে এলার্জিক রাইনাইটিস সমস্যা হচ্ছে সেই ‘মাইট’ এলারজেন স্বল্প মাত্রায় প্রয়োগ করা হয়। ক্রমান্বয়ে সহনীয় বেশি মাত্রায় দেওয়া হয় যাতে শরীরের এলার্জির কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা না দেয়। তবে শরীরের বিপাকীয় প্রক্রিয়ার পরিবর্তন ঘটায় বা শরীরের এলার্জির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলে।

মানে আইজিইকে আইজিজিতে পরিণত করে, যাতে দীর্ঘ মেয়াদি এলার্জি ওষুধ দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। ফলে রোগের মাত্রা সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসে। তবে এলার্জির কোনো পরিবর্তন করতে পারে না।

যদিও স্টেরয়েডজাতীয় ওষুধ এলার্জির জন্য সবচেয়ে বেশি উপকারী। তবে এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া জীবনের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। তাই এ ধরনের এলার্জিক রাইনাইটিসের ক্ষেত্রে ইমুনোথেরাপি বা ভ্যাকসিন বেশি কার্যকর।

বিশ্বের অধিকাংশ দেশ বিশেষত উন্নত দেশগুলোতে এ পদ্ধতিতে চিকিৎসা দেওয়া হয়ে থাকে। বর্তমানে বিশ্ব স্বাস্থ সংস্থাও এই ভ্যাকসিন পদ্ধতির চিকিৎসাকে এলার্জিক রাইনাইটিস রোগের অন্যতম চিকিৎসা বলে অভিহিত করেন। এটাই এলার্জিক রাইনাইটিস রোগীদের দীর্ঘমেয়াদি সুস্থ থাকার একমাত্র চিকিৎসা পদ্ধতি।

অনেকের ধারণা এলার্জিজনিত রোগ একবার হলে আর সারে না। তবে বর্তমানে চিকিৎসা ব্যবস্থা যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। প্রথম দিকে ধরা পড়লে এলার্জিজনিত রোগ একেবারে সারিয়ে তোলা সম্ভব।

অবহেলা করলে এবং রোগ অনেক দিন ধরে চলতে থাকলে নিরাময় করা কঠিন হয়ে পড়ে এবং এলার্জিজনতি রোগের কোনো চিকিৎসা বাংলাদেশে নেই।
2 سال پیش در تاریخ 1401/06/02 منتشر شده است.
260,654 بـار بازدید شده
... بیشتر